কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে প্রভাব বিস্তারের জন্য মহড়া দেওয়ার সময় গুলিভর্তি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার রাতে উপজেলার নান্দিনা এলাকা থেকে তাদের আটক করে যৌথবাহিনী।
এ সময় নান্দিনা এলাকার মৃত কাশেম মেম্বারের ছেলে গোলাম সারোয়ার ভুবনের (২৭) সঙ্গে থাকা ৬ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে যৌথবাহিনী।
ভুবনের সঙ্গে থাকা বাকি ২১ জনের কাছ থেকে একটি রামদাসহ বেশ কয়েকটি স্টিলের পাইপ উদ্ধার করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে বাজিতপুর থানার উপপরিদর্শক মো. উজ্জ্বল বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুরাদ হোসেন জানান, আজ বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত সবাইকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আটককৃত সবাই কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) সংসদীয় আসনে বিএনপি জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয় দলের সভাপতি ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদার অনুসারী।
স্থানীয়রা আরও জানায়, বেশ কয়েকদিন ধরেই কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালের সমর্থকদের সঙ্গে সৈয়দ এহসানুল হুদার সমর্থকদের উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
শনিবার দুপুরে ইকবালের মনোনয়নের দাবিতে তার সমর্থকরা নিকলী-বাজিতপুর দুই উপজেলায় প্রায় ২২ কিলোমিটার সড়কের একাধিক জায়গায় মানববন্ধন করেন।
এদিকে বিকেলে সৈয়দ এহসানুল হুদা গণসংযোগ করে বাজিতপুর বাজারে লাঠি মিছিল করে। এ সময় উপজেলার সরিষাপুর মোড় এলাকায় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেখানে হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
হুদার সমর্থকদের দাবি, তারা বাজিতপুর ডাকবাংলো এলাকায় গণসংযোগ যাওয়ার সময় ইকবালের সমর্থকরা তাদের রাস্তায় আটকিয়ে হামলা চালায়। এতে কয়েকজন আহতও হন।
ঘটনার পরে হুদার লোকজন দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠিসোটা নিয়ে বাজিতপুর পৌর সদরের বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়।
খবর পেয়ে রাতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও দেশীয় অস্ত্রসহ ২২ জনকে আটক করে বাজিতপুর থানায় হস্তান্তর করে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে, কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।’
শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমার সমর্থকরা আমার মনোনয়নের দাবিতে মানববন্ধনসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে।’
গত ৩ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ২৩৭ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জে ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
এখনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি কিশোরগঞ্জ–১ ও ৫ আসনে। গুঞ্জন আছে, আসন দুটি বিএনপি তাদের মিত্রদের জন্য ছেড়ে দিতে পারে। তবে বিষয়টি মানতে নারাজ স্থানীয় বিএনপির একটা অংশ।

