আয়ারল্যান্ডের প্রতিরোধ ভেঙে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

ম্যাচের ফল নিয়ে কোন পর্যায়েই সংশয় খুব বেশি ছিলো না। তবে আগের দিন বিকেল থেকেই চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তায় বাংলাদেশের কাজটা কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলছিলেন কার্টিস ক্যাম্পার, তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন আয়ারল্যান্ডের শেষ দিকের ব্যাটাররা। অবশেষে দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝি এসে সেই প্রতিরোধ ভেঙে দলকে প্রত্যাশিত জয় পাইয়ে দিলেন হাসান মুরাদ।

মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট বাংলাদেশ জিতেছে ২১৭ রানের বড় ব্যবধানে। ৫০৯ রানের লক্ষ্যে নামা আয়ারল্যান্ড চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করেছে ১১৩.৩ ওভার। মিরপুরের মাঠে সফরকারী দলের মধ্যে যা সর্বোচ্চ ওভার ব্যাট করার নজির। আগের দিনের ৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে নেমে শেষ দিনে তারা ব্যাট করতে পেরেছে আরও ৫৯.৩ ওভার।  এই জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করল স্বাগতিক দল। টেস্টে এমন মধুর অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ পেল পঞ্চমবারের মতন। 

এই ইনিংসে বাংলাদেশের সফল বোলার মুরাদ। ৪৪ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। ১০৪ রানে ৪ উইকেট তাইজুল ইসলাম, ম্যাচে তিনি নেন ৮ উইকেট। তবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। 

আইরিশদের দারুণ লড়াইয় শেষ করে ১১৪তম ওভারে পর পর দুই বল দুই উইকেট ফেলে ইনিংস মুড়ে দেন মুরাদ। ১০৪ বলে ৩৭ করা গাভিন হোয়েকে এলবিডব্লিউ করে প্রথমে ভাঙেন ১৯১ বলে ৫৪ রানের জুটি। পরের বলে ম্যাথু হ্যামফ্রিস হয়ে যান বোল্ড।

শক্ত মানসিকতা, পরিস্থিতিতির দাবি মেটানো দৃঢ়তায় আরেক পাশে অপরাজিত থেকে যান পাঁচে নামা ক্যাম্পের। ২৫৯ বলে ৭১ রান করেন তিনি। মিরপুরের মাঠে চতুর্থ ইনিংসে তার চেয়ে বেশি বল খেলার নজির নেই আর কারো।

৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে নামা আয়ারল্যান্ড প্রথম সেশনে ৩৯ ওভার ব্যাট করে হারায় কেবল ২ উইকেট। ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ায় লাঞ্চ প্রলম্বিত করা হলেও টিকে যায় তারা। 

আইরিশদের টিকে থাকার নিবেদন ছিলো দেখার মতন। টেম্পারমেন্টের পরীক্ষায় দারুণ মুন্সিয়ানা দেখান ক্যাম্পের। অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকে নিয়ে দিনের শুরুটা কাটিয়ে দেন। এই জুটিতে ১০৯ বলে ২৬ আসার পর ম্যাকব্রিন শিকার হন তাইজুলের। ম্যাকব্রিনকে এলবিডব্লিউ করে ২৫০তম টেস্ট উইকেট পান বাঁহাতি স্পিনার। 

এরপর জর্ডান নেইলকে নিয়ে আবারও দৃঢ়তা দেখাতে থাকেন তিনি। ৮ম উইকেটে ৮৫ বলে যোগ হয় আরও ৪৮ রান। লাঞ্চের খানিক আগে ৪৬ বলে ৩০ করে ফেরেন নেইল। এরপর হোয়েকে নিয়ে দারুণ এক জুটিতে শান্তদের হতাশা বাড়াতে থাকেন ক্যাম্পার। এই জুটি খেলে ফেলে ১৯১ বল।  চা-বিরতি পর্যন্ত ব্যাট করার সম্ভাবনা তখন প্রবল। তবে ম্যাচকে আর লম্বা হতে দেননি মুরাদ। এই সিরিজে অভিষেক হওয়া স্পিনার পর পর দুই বলে শেষ করে দেন খেলা। 

Related Articles

Latest Posts