২০১৮ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ৭ বছরে আয়ারল্যান্ড গোটা দল খেলতে পেরেছে কেবল ১২টি টেস্ট। বছরে গড়ে দুটি টেস্ট খেলার সুযোগও পায়নি তারা। মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট উদযাপনের বর্ণাঢ্য আয়োজন তারা দাঁড়িয়ে দেখেছেন অসহায়ের মতন, যাতে ঝরে পড়েছে আক্ষেপ। সিরিজ শেষে আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি সেই আক্ষেপ আর আড়াল করলেন না।
বাংলাদেশ সফরে এবার আয়ারল্যান্ড চেয়েছিল এক টেস্টের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ খেলতে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অনুরোধে তারা ওয়ানডে বাদ দিয়ে আরেক টেস্ট খেলতে রাজী হয়। যে টেস্টটি আসলে মুশফিকের জন্যই অনেকটা আয়োজিত হয়েছে।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০ বছরের দীর্ঘ চক্র পূরণ করে শততম টেস্টে নামেন মুশফিক। গোটা আয়ারল্যান্ড দল মিলে যেখানে কেবল খেলেছে এক ডজন টেস্ট সেই জায়গায় ব্যবধানটা স্পষ্ট।
কেবল টেস্ট নয়, প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট কাঠামোও প্রায় নেই বললেই চলে দেশটির। পাঁচ বছর ধরে প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট হয় না আয়ারল্যান্ডে। প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট নেই, নেই নিয়মিত টেস্ট খেলার সুযোগ। এই অবস্থাতেও কম হাল ছাড়েনি তারা। মিরপুর টেস্ট লড়াই করে পঞ্চম দিনে নিয়ে আসে খেলা।
অনুমিতভাবে হোয়াইটওয়াশ হলেও ভালো কিছু লড়াইয়ের স্মৃতি নিয়ে যাবে দলটি। সিরিজ শেষে কথা বলতে এসে আয়ারলায়ন্ড অধিনায়ক বালবার্নি এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই তুলে ধরলেন নিজেদের বিবর্ণ বাস্তবতা, ‘আমার মনে হয় আমরা চারজন নতুন টেস্ট ক্রিকেটার পেয়েছি। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু। আপনি শুধু মুশফিকুরের দিকে তাকালেই বুঝবেন—এই সপ্তাহে তিনি তার ১০০তম টেস্ট খেলেছেন। আমার মনে হয়, তার প্রথম টেস্ট ছিল ২০০৫ সালে। অর্থাৎ প্রায় ২০ বছর। আমাদের কোনো খেলোয়াড়কে যদি ১০০ টেস্ট খেলতে হয়, তবে তার সম্ভবত ৫০ বছর খেলতে হবে। তাই এই বিভাগে আমাদের প্রথম “সেঞ্চুরিয়ানের” দেখা কবে মিলবে, জানি না।’
মুশফিকুরের কাছ থেকে তবু প্রেরণা নিয়ে নিজেদের ধীরে ধীরে এগুতে চায় আয়ারল্যান্ড। পরের প্রজন্মের জন্য হলেও একটা বেঞ্চ মার্ক তৈরি করতে চান বালবার্নি, ‘মুশফিকুর একটি দারুণ উদাহরণ—যিনি ২০০৫ সালে খেলেছেন, তখন একজন বাংলাদেশি টেস্ট ক্রিকেটার হওয়া নিশ্চয়ই খুবই কঠিন ছিল, আর এখন তিনি এমন এক জায়গায় পৌঁছেছেন যেখানে নিজস্ব কন্ডিশনে তারা যেকোনো দলের মতোই প্রতিযোগিতামূলক। তাই আমরা একটি দেশ হিসেবে অগ্রগতি করছি—ধীরে, খুব ধীরে। কিন্তু আমরা যা করতে পারি সেটা হলো ধাপে ধাপে এগিয়ে চলা। আশা করি ভবিষ্যতে, যখন আমরা আরও বয়সী হব, তখন আয়ারল্যান্ডকে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় দেখতে পারব।’

